হাওজা নিউজ এজেন্সি: এক হাদিসে, হযরত মূসা (আ.) এক যুবককে উদাহরণ দিয়ে বোঝান যে ইবাদত আল্লাহর জন্য কোনো লাভ বা ক্ষতি নয়, বরং এটি মানুষের জন্য শয়তানের ফন্দি থেকে রক্ষা পাওয়ার এক মাধ্যম।
একদিন এক যুবক হযরত মূসা (আ.)-এর কাছে এসে বলল, “হে মূসা! আমাদের ইবাদত আল্লাহর জন্য কী লাভ বইয়ে আনে, যে তুমি এতো জোর দিয়ে তা পালন করতে বলছ?”
হযরত মূসা (আ.) উত্তর দিলেন, “আমার মনে আছে, যখন আমি কিশোর ছিলাম, শোয়াইব নবীর (আ.) গবাদি পশুর দেখাশোনা করতাম। একদিন একটি দুর্বল বকরি পাহাড়ের এক বিপজ্জনক স্থানে চলে গেল। নিচে নামার সময় তার জন্য দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। আমি অনেক কষ্ট ও ঝুঁকি নিয়ে তার কাছে পৌঁছালাম, তাকে কোলে তুলে নিলাম এবং কানে বললাম, ‘হে বকরি! তুমি জানো কি, তোমার পেছনে আমার দৌড়ানো, তোমাকে ডেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা, কোনো নিকেলের (অর্থ বা লাভ) জন্য নয়—যা বিক্রির মাধ্যমে আমার পকেটে যাবে।
হে বকরি, তুমি জানো! মূসা, সেই নিকেলের জন্য যা তোমার রক্ষার বা বিক্রি করে আসবে, তা আমার প্রয়োজন নেই। আমি তোমার পেছনে দৌড়াচ্ছি কারণ তোমার জন্য অপেক্ষা করছে একটি শিয়াল—যা তুমি দেখতে পারছ না। যদি তুমি আমার কাছে না থাকো, সে তোমাকে শিকার করতে পারে।’
অতঃপর, হযরত মূসা (আ.) যোগ করলেন, “হে যুবক! বুঝে নিও, আল্লাহ আমাদের ইবাদত থেকে কোনো লাভ বা ক্ষতি পান না। বরং তিনি চায় আমরা তার নিকট থাকি, যাতে আমরা শয়তানের—হিংসুক ও ধোঁকাবাজ শয়তান—ফন্দি থেকে রক্ষা পাই।”
কোরআনে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে: “যে ব্যক্তি আল্লাহর স্মরণ থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেয়, আমরা তার জন্য শয়তানকে পাঠাই; সে সর্বদা তার সঙ্গী।”
[সূরা জুখরুফ, আয়াত ৩৬]
উৎস: হায়াতুল কুলূব, আল্লামা মজলিসি (রহ.)

ইবাদত কি আল্লাহর কোনো প্রয়োজন মেটায়, নাকি এটি মানুষের আত্মরক্ষার জন্য একটি মাধ্যম? হযরত মূসা (আ.)-এর উদাহরণ আমাদের শেখায়, ইবাদত আল্লাহর জন্য নয়—বরং এটি শয়তানের ফন্দি থেকে রক্ষা পাওয়ার একটি সুরক্ষা ও পথপ্রদর্শক।
আপনার কমেন্ট